ভোটগ্রহণ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে বলে জানিয়েছে। সোমবার মধ্যরাতে শেষ হয়েছে দুই সিটি নির্বাচনের প্রচারণা।
এর আগে মঙ্গলবার (২০ জুন) কেন্দ্রগুলোতে নির্বাচনী সরঞ্জামাদি পাঠানো হয়েছে।
দুই সিটিতেই ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ করা হবে। ভোটারদের সুবিধার জন্য ইতোমধ্যে ঘোষণা করা হয়েছে সাধারণ ছুটিও।
রাজশাহী সিটি ভোট:
রাজশাহী অঞ্চলিক নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, রাসিকের এই সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৪ জন প্রার্থী। তারা হলেন, আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাবেক মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সাইফুল ইসলাম স্বপন, জাকের পার্টির লতিফ আনোয়ার ও ইসলামী আন্দোলনের মুরশিদ আলম। যদিও গত ১২ জুন রাজশাহীতে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে ইসলামী আন্দোলনের মুরশিদ আলম ফারুকী ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন।
এছাড়া সাধারণ ৩০টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী ১১২ জন। আর সংরক্ষিত নারী আসনের ১০টি (জোনে) ওয়ার্ডে প্রার্থী ৪৬ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। রাসিকে এবার ৩ লাখ ৫১ হাজার ৯৮২ জন ভোটার ভোট দেবেন। এরমধ্যে নতুন ভোটার ৩০ হাজার ১৫৭ জন। পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৭১ হাজার ১৬৭ জন এবং নারী ১ লাখ ৮০ হাজার ৮০৯ জন। এই তালিকায় ৬ জন তৃতীয় লিঙ্গের মানুষও রয়েছে। এছাড়া ১৫৫টি ভোটকেন্দ্রে ১ হাজার ১৫৩টি কক্ষে ইভিএমে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। অস্থায়ী ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ৩টি এবং স্থায়ী ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ১৬২টি।
নির্বাচন অফিস সূত্রে আরও জানা গেছে, রাসিকের ১৫৫টি কেন্দ্রই গুরুত্বপূর্ণ (ঝুঁকিপূর্ণ)। এরমধ্যে ১৪৮টি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ ও ৭টি কেন্দ্র অতি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়েছে। এসব কেন্দ্রে স্থাপন করা হয়েছে ১ হাজার ৫৬০টি ক্লোজ সার্কিট (সিসিটিভি) ক্যামেরা। এছাড়া কেন্দ্রের বুথগুলোতেও থাকছে এই ক্যামেরা।
নির্বাচনের দিনে ভোট কেন্দ্রগুলোতে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বাড়তি সতর্কতা থাকবে। প্রতিটি কেন্দ্রে পুলিশের পাশাপশি থাকছে আনসার সদস্যরা। নিরাপত্তায় দায়িত্ব পালন করবেন ৩ হাজার ৫১৪ জন পুলিশ, ১ হাজার ৯৩৫ আনসার সদস্য। এছাড়া নগরজুড়ে টহল থাকবে ৩০০ জন র্যাব সদস্য। একই সঙ্গে কাজ করবে ১০ প্লাটুন বিজিবির সদস্য। থাকবেন ৩০ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ১০ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট। ভোটগ্রহণের দায়িত্বে থাকবেন ৩ হাজার ৬১৪ জন কর্মকর্তা।
নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন জানান, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণ করতে সবধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ বা ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলোর তালিকা করা হয়েছে। ১৫৫টি কেন্দ্রের মধ্যে ১৪৮ কেন্দ্রকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। কেন্দ্রে কেন্দ্রে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা লাগানো হয়েছে।
রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার আনিসুর রহমান বলেন, ১৫৫টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হবে। এরমধ্যে ১৪৮টি গুরুত্বপূর্ণ ও ৭টি সাধারণ ভোট কেন্দ্র। কিন্তু আমরা সব কেন্দ্রগুলোকেই গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছি। প্রতিটি কেন্দ্র এলাকায় ৫ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছে। নির্বাচনকে সুষ্ঠু করতে আইনশৃঙ্খলা পরিবেশ স্বাভাবিক রাখতে পুলিশের পাশাপাশি বিজিবি, র্যাব ও আনসার সদস্যবৃন্দ দায়িত্ব পালন করবে। নির্বাচন পূর্ববর্তী এবং নির্বাচন পরবর্তী সময়ে যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রস্তুত থাকবে।