চট্টগ্রাম নগরীর পতেঙ্গায় আসমা আক্তার (২৬) নামে এক গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যুর নয় দিন পর ময়নাতদন্তের জন্য কবর থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
বুধবার (১৪ জুন) লক্ষীপুর জেলার রামগঞ্জ থানার পশ্চিম কাদিরখিল মিজি বাড়ির কবরস্থান থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পতেঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জায়েদ মো. নাজমুন নুর।
তিনি বলেন, নিহত আসমা আক্তার টেকনাফ থানার নাইটং পাড়ার মো. আলমের মেয়ে। ১২ বছর আগে আসমা গার্মেন্টসে চাকরি করার জন্য চট্টগ্রামে আসে। গার্মেন্টেসের চাকরি সূত্রে সাহেদুজ্জামানের সাথে তার পরিচয় হয়। এরপর তারা বিয়ে করেন। তাদের এক ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে। গত ১০ জুন বিকাল সাড়ে ৫টায় সাহেদুজ্জামান তার শ্বশুর মো. আলমের নম্বরে ফোন করে তার মেয়ে গলায় ফাঁস দিয়েছে বলে জানায় এবং তাকে চট্টগ্রামে আসতে বলেন।
তিনি আরও বলেন, আলম চট্টগ্রাম নগরীতে থাকা তার আরেক মেয়ে রোকেয়াকে ঘটনাস্থলে যেতে বলেন। সন্ধ্যা ৬টায় রোকেয়া বাবাকে ফোনে জানায়, লাশ ফুলে যাওয়ার কথা বলে বোনকে তার স্বামী গ্রামের বাড়ি নিয়ে যাচ্ছে। এদিন রাত সাড়ে ৮টার পর সাহেদুজ্জামান তার ফোন বন্ধ করে দেয়। মেয়ের খোঁজে ১২ জুন আলম পরিবারের সদস্যদের নিয়ে খেজুরতলা এলাকায় তার বাসায় গিয়ে কাউকে পাননি।
প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, আসমার গলায় দাগ ছিল এবং লাশটি কাঁথা দিয়ে মোড়ানো ছিল। রিমন একজন ডাক্তার নিয়ে বাসায় গেলে তিনি আসমাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে অ্যাম্বুলেন্সে করে লাশ নিয়ে যান রিমন।
আলমও তার পরিবারের ধারণা ১০ জুন বিকেলে অজ্ঞাতনামা আসামিরা তার মেয়েকে হত্যা করে লাশ গুম করার জন্য রামগঞ্জ নিয়ে গেছে। এ ঘটনায় তিনি পতেঙ্গা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
ওসি আবু জায়েদ মো. নাজমুন নুর আরও জানান, এ ঘটনায় গত ১৪ জুন নগরীর ইপিজেড থানাধীন কাজীগলি এলাকা থেকে নিহত গৃহবধূ আসমার স্বামী কাজী সাহেদুজ্জামান রিমনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার স্বীকারোক্তি মতে তার বাসা থেকে একটি লোহার বটি ও পাঁচটি কালো সাদা রঙের রশির ছেড়া অংশ উদ্ধার করা হয়। এরপর আদালত তাকে ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে। রিমান্ডে সাহেদুজ্জামান তার স্ত্রী মারা যাওয়ার পর লক্ষীপুরের রামগঞ্জ থানার পশ্চিম কাদিরখিল মিজি বাড়ির কবরস্থানে কবর দেয়। গতকাল তার দেয়া তথ্যমতে সকাল পৌনে ১২টায় লক্ষীপুর জেলার রামগঞ্জ থানাধীন পশ্চিম কাদিরখিল মিজি বাড়ির কবরস্থান থেকে তার গলিত লাশ উদ্ধার করা হয়। এসময় ওই এলাকার সহকারী কমিশনার (ভুমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মনিরা খাতুন উপস্থিত ছিলেন। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।