মৃত্যুর আগে লাইভে এসে যা বলেছিলেন সাংবাদিক নাদিম

82

জামালপুরের বকশীগঞ্জে সন্ত্রাসীদের হামলায় গোলাম রব্বানি নাদিম নামে এক সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা আড়াইটায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

Advertisement
spot_img

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তার একটি লাইভ ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। তবে সেই ভিডিওটি তিনি কবে প্রকাশ করেছেন তার সঠিক কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

ভিডিওতে তিনি বলেন, ‘আমাকে টেনে হেঁচড়ে নিয়ে যাওয়া হয়। নিয়ে যাওয়ার পর সেখানে শামিম, শেখ ফরিদ ও হেলালসহ আরও কয়েকজন আমাকে মারধর করে। পরে স্থানীয়রা আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। আজকে আমি বকশিগঞ্জ থানায় একটি একটি অভিযোগ দিয়েছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘থানায় অভিযোগ দেওয়ার পরও আমি আশঙ্কার মধ্যে রয়েছি পুলিশ অভিযোগটা আমলে নেয় কিনা। কারণ এখানে যিনি প্রধান আসামি তিনি খুবই ক্ষমতাশালী। তাই তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়ে এখন নিজেই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমি একজন সংবাদকর্মী হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং পুলিশের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা যারা আছেন তাদের কাছে আমি আমার জীবনের নিরাপত্তা চাই। আমার পরিবারের নিরাপত্তা চাই। একইসঙ্গে আমি যেনো সুস্থভাবে সাংবাদিকতা করতে পারি সেই নিরাপত্তা চাই।’

উল্লেখ্য, গত বুধবার অফিসের কাজ শেষে রাত ১০টায় মোটরসাইকেল যোগে বাড়ি ফিরছিলেন সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিম। পথে বকশীগঞ্জ পাটহাটি মোড়ে ৮-১০ জনের একটি সন্ত্রাসী দল তার মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে এবং তাকে টেনে হেঁচড়ে রাস্তার ওপারে নিয়ে বেধড়ক মারধর করে অজ্ঞান অবস্থায় ফেলে যায়।

পরে নাদিমকে উদ্ধার করে স্থানীয়রা তাকে বকশীগঞ্জ হাসপাতালে নিয়ে যায়। চিকিৎসক তাকে জামালপুর জেনারেল হাসপাতাল রেফার করেন। অবস্থার অবনতি হলে গত বৃহস্পতিবার সকালে তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুরে তিনি মারা যান।

আজ শুক্রবার শোক আর শ্রদ্ধায় সাংবাদিক নাদিমকে চির বিদায় দেওয়া হয়েছে। সকাল ১০টায় বকশীগঞ্জ নূর মোহাম্মদ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে প্রথম জানাযা ও দুপুর ১২টায় নিলক্ষিয়া ঈদগাঁ মাঠে দ্বিতীয় জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তার দাদা-দাদির কবরের পাশে সমাহিত করা হয়। সাংবাদিক নাদিমের অকাল মৃত্যুতে সাংবাদিক পুরো জেলায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

আজ বিকেলে জামালপুরের পুলিশ সুপার নাছির উদ্দিন আহামেদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। পরিদর্শন শেষে পুলিশ সুপার সন্ত্রাসী হামলায় নিহত সাংবাদিক গোলাম রাব্বানীর বাড়িতে যান। তিনি সাংবাদিক নাদিমের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন ও তাদের সান্ত্বনা দেন। সকল আসামিকে দ্রুত গ্রেপ্তার করা হবে বলে জানান তিনি।

Advertisement
spot_img