দিনব্যাপী এই সভায় জাতীয় স্থায়ী কমিটি, জাতীয় নির্বাহী কমিটি, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা, জেলা-মহানগর, থানা, পৌরসভা, উপজেলা কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, ২০১৮ সালে দলীয় প্রতীকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী সদস্য এবং দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা অংশ নেবেন। ১৯৯৭ সালের পর বড় পরিসরে এমন বর্ধিত সভা এটাই প্রথম।
এই সভা আহ্বান করেছেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি সভায় ভার্চুয়ালি যোগ দেবেন এবং সবার বক্তব্য শুনবেন এবং তিনিও জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতিসহ একগুচ্ছ নির্দেশনা দেবেন।
এদিকে বর্ধিত সভা সফল করতে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ও বর্ধিত সভা ব্যবস্থাপনা কমিটির আহ্বায়ক রুহুল কবির রিজভীর নেতৃত্বে সার্বিক প্রস্তুতি চলছে। তিনি বলেন, ‘বর্ধিত সভা সফল করতে গঠিত একাধিক উপকমিটি কাজ করছে।’
জানা গেছে, ২৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠেয় বর্ধিত সভা সকাল ১০টা থেকে রাত পর্যন্ত চলবে। সভায় অংশ নেওয়া নেতাদের জন্য সকালের নাস্তা, দুপুরের খাবার, সন্ধ্যার নাস্তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
আজ সোমবার জাতীয় সংসদ ভবন এলাকার বিএনপির বর্ধিত সভাস্থল পরিদর্শন করেন দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা। এদের মধ্যে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক ডা. মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল, বিএনপির কোষাধ্যক্ষ রশিদুজ্জামান মিল্লাত, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, সাবেক এমপি শাম্মী আখতার, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা হাবিবুর রশীদ হাবিব, আমিরুল ইসলাম খান শিমুল, ডা. মাহবুব লিটন, শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক, আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারী প্রমুখ।
সভাস্থল পরিদর্শন শেষে বিএনপির মিডিয়া সেলের প্রধান ডা. মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল বলেন, ১৯৯৭ সালের পর এই প্রথম দলের প্রথম নির্বাহী কমিটির বর্ধিত সভা আহ্বান করেছেন আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সেখান থেকে মাঠ পর্যায়ের চলমান রাজনীতিক পরিস্থিতি, সামাজিক ও অর্থনীতি অবস্থা বিরাজ করছেন, তার সম্পর্কে সবার কাছ থেকে একটি ধারণা নিতে চান।
বর্ধিত সভাস্থল পরিদর্শন শেষে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী বলেন, আগামী দিনের জাতির প্রত্যাশা একটা সুষ্ঠু, স্বাভাবিক ও সাধারণ নির্বাচন। যেটি গণতন্ত্রের ভিতকে শক্তিশালী করার জন্য বেশি দরকার। সেই দিকে আমরা বেশি নজর দিচ্ছি। আমার বিশ্বাস, দেশে যদি একটি গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত থাকে, জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়, তাহলে সব ষড়যন্ত্রকে মোকাবেলা করে আমরা আমাদের লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারব।
শহীদ উদ্দিন এ্যানী বলেন, ফ্যাসিবাদের দুঃশাসনের কারণে আমরা গত ১৫-১৬ বছর সাংগঠনিক তৎপরতা ও গোছানোর কাজটি আমরা ঠিক মতে করতে পারিনি। ৫ আগস্টের পর তৃণমূলে আমরা আমাদের সাংগঠনিক তৎপরতা শুরু করেছি। যার কারণে ২৭ ফেব্রুয়ারির বর্ধিত সভা আমাদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সভায় দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দেবেন জানিয়ে এ্যানী বলেন, সভায় সাড়ে ৩ থেকে ৪ হাজার নেতা অংশ নেবেন। সেখানে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখবেন, নেতাকর্মীদের তার বার্তা দেবেন। যা নেতাকর্মীদের মধ্যে ঐক্য তৈরি করবে। যা বাংলাদেশের এই মুহুর্তে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ পতিত ফ্যাসিস সরকার যেভাবে লুটপাঠ করেছে, অত্যাচার-নির্যাতন, গুম-খুন করেছে রাজনীতি করেছে, তাদের সেই দুঃশাসনের কারণে দেশে এখনও অস্থিরতা চলছে। পতিন ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পালিয়ে গেলেও অর্থ দিয়ে ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে বলে দাবি করেন এ্যানী। তিনি বলেন, আমরা আইনশৃঙ্খলার অবনতি লক্ষ্য করছি। বর্ধিত সভায় আগামীদিনের করণীয় কি, ভবিষ্যত বাংলাদেশ কি ধরনের হতে পারে সেটা নিয়ে তারেক রহমান আলোচনা করবেন বলেও উল্লেখ করেন বিএনপির এই নেতা।
ডা. মওদুদ হোসেন বলেন, একইসঙ্গে আপনারা জানেন, ষড়যন্ত্র থেমে নেই। বাংলাদেশ যাতে গণতান্ত্রিক ধারণা সফল হতে না পারে তার জন্য দেশী-আন্তর্জাতিক বিভিন্ন পর্যায়ের ষড়যন্ত্র চলছে। সেইখানে করণীয় কী, তা নিয়ে বর্ধিত সভায় দলের শীর্ষ পর্যায় থেকে দলের সব পর্যায়ের নেতাকর্মীদের একটি নির্দেশনা দেওয়া হবে।
প্রকৃত গণতন্ত্রের বিকাশ তখনি হবে যখন দেশে একটি গণতান্ত্রিক সরকার রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে থাকবে বলে উল্লেখ করেন মওদুদ আহমেদ। তিনি আরও বলেন, সেইক্ষেত্রে জনগণ সর্বোচ্চ সিদ্ধান্ত দাতা। তাদের কাছে বিএনপি সব সময় গেছে। সেই নিয়ে আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশেবাসীর উদ্দেশ্যে বার্তা দিতে চান, কিভাবে আগামী দিনে আমরা গণতান্ত্রিকভাবে সফল হতে পারি।