জীবনকে ফুলের মত পবিত্র করে গড়ে তুলতে হবে -মন্ত্রিপরিষদ সচিব

72

ফুল পবিত্রতার প্রতীক, সৌন্দর্যের প্রতীক। ফুল মানুষের মনে প্রশান্তি এনে দেয়, মানুষের মনে নির্মল আনন্দ নিয়ে আসে। ফুলের সমারোহে এসে মানুষ সব মন্দ কাজ ভুলে সমাজের ইতিবাচক কার্যক্রমে নিজেকে সম্পৃক্ত করে। সমাজের সকল স্তুর থেকে নেতিবাচক মনোভাব দুর করে ফুল সমাজে ভালবাসার নতুন বারতা নিয়ে আসে।

Advertisement
spot_img

সেই আকাঙ্খাকে সামনে রেখে বঙ্গোপসাগরের কোলঘেঁষে সীতাকু- উপকূলে বেদখল হওয়া ১৯৪ একর জায়গা উদ্ধার করে জেলা প্রশাসন ৩য় বারের মতো চট্টগ্রাম ফুল উৎসব আয়োজন করেছে। আগে এ জায়গাটি মাদক সেবীদের আখড়া ছিলো। সে স্থানে এখন বসেছে ভালবাসার মিলনমেলা তথা ফুল উৎসব।

ডালিয়া, চন্দ্রমল্লিকা, গোলাপ-গাঁদা প্রভৃতি দেশী বিদেশী ১৩৬ প্রজাতির ফুলের পসরা বসেছে এ মেলায়। ফুলের সৌরভে চারদিক মাতোয়ারা। ফুলের সুবাসে সুবাসিত পুরো চট্টগ্রাম।

এহেন নয়নাভিরাম ফুল উৎসব আজ শুরু হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আব্দুর রশীদ এ উৎসব উদ্বোধন করেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতে ফিতা কেটে, বেলুন ও শান্তির কপোত উড়িয়ে মাসব্যাপী চট্টগ্রাম ফুল উৎসবের উদ্বোধন করেন তিনি। উদ্বোধন শেষে প্রধান অতিথি অন্যান্য অতিথিদের নিয়ে ভাসমান ফুল বাগানসহ বিভিন্ন প্রজাতির ফুলের সমারোহ পরিদর্শন করেন।

উদ্বোধনী বক্তৃতায় মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আমরা যারা দায়িত্বশীল আছি এবং ভবিষ্যতে যারা দায়িত্ব গ্রহণ করবে সবার জীবনকে ফুলের মত পবিত্র করে গড়ে তুলতে হবে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, চট্টগ্রামের বড় ঐতিহ্য হচ্ছে মেজবান। এটা বছরের পর বছর ধরে চলছে বিধায় ঐতিহ্যতে রুপ নিয়েছে। একইভাবে যদি এ ফুল উৎসব টিকিয়ে রাখা যায় আগামীতে এটাও চট্টগ্রামের ঐতিহ্যে রুপ নেবে। মানুষের মনের প্রশান্তি মেটাতে এ ধরনের উৎসবের প্রয়োজন রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, চট্টগ্রামের মানুষের এ উদ্যোগ যখন দেশের সবাই জানতে পারবে তখন অন্যরাও ফুল উৎসব করার জন্য এগিয়ে আসবে এবং এটার জন্য সরকার সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবে।

তিনি আরো বলেন, ফুল আমাদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। ফুল মনের জড়তা, সংকীর্ণতা দূর করে মানুষের মনকে নির্মল আনন্দ দেয়। জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত আমাদের জীবনে ফুল ব্যবহার হয়ে থাকে। আজকে ১৩৬ প্রজাতির প্রায় ১ লক্ষ ফুল দেখে আমার মন প্রশান্তিতে ভরে গেছে। আগামী প্রজন্মের মনে ফুলের মাধুর্যকে ফুটিয়ে তুলতে এ ফুল উৎসব সহায়তা করবে।

জেলা প্রশাসক ফরিদা খানমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিভাগীয় কমিশনার ড. মোঃ জিয়াউদ্দীন বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন। স্থানীয় সরকারের অতিরিক্ত সচিব মোঃ নজরুল ইসলাম, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্ম সচিব মোঃ খোরশেদ আলম খান, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মোঃ নুরুল্লাহ নুরী, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মুহাম্মদ আনোয়ার পাশা, চট্টগ্রাম বিভাগীয় ও জেলা প্রশাসনের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী, শিক্ষার্থী, সুধীজন ও স্থানীয় শিল্পী, কলকৌশলী, অসংখ্য দর্শণার্থীসহ প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জেলা শিল্পকলা একাডেমির শিল্পীদের পরিবেশনায় দলীয় নৃত্য, সঙ্গীত, দ্বৈতসঙ্গীত ও পাপেট শো পরিবেশিত হয়।
সভাপতির বক্তৃতায় জেলা প্রশাসক বলেন, আপনার সবাই জানেন ফুল পবিত্রতার প্রতীক। আমরা মানুষকে যখন আর্শীবাদ জানাই তখন বলি, তোমার জীবন ফুলের মত সুন্দর হোক। তাইতো ফুল উৎসব। আগে এ জায়গাটা মাদকের অভয়ারণ্য ছিল। দখলদার ও সন্ত্রাসীদের হাত থেকে ১৯৪ একর জায়গাকে উদ্ধার করে ফুলের পবিত্র ভূমিতে উন্নীত করতে পেরে আনন্দ অনুভব করছি। এ ফুল উৎসবকে শুধু মাসব্যাপী না করে সারাবছর যাতে করা যায় এবিষয় নিয়ে আমাদের চিন্তা রয়েছে।

মেলায় ডালিয়া, চন্দ্রমল্লিকা, গোলাপ-গাঁদা নানা রকমের দেশি ফুলের পাশাপাশি বিদেশি ফুলের বাহারও রয়েছে। এবার প্রায় ১২ লাখ ফুলপ্রেমীদের সমাগম আশা করছেন আয়োজকরা। মেলার বিভিন্ন দিনে মাল্টি কালচারাল ফেস্টিভ্যাল, বই মেলা, পুতুল নাচ, গ্রামীণ মেলা, লেজার লাইট শো, ভায়োলিন শো, মুভি শো এবং পিঠাপুলি উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পযর্šÍ পার্ক দর্শণার্থীদের জন্য খোলা থাকবে এবং টিকিটের মূল্য জনপ্রতি ৫০ টাকা। মেলায় দর্শণার্থীদের জন্য টয়লেট ও সুপেয় পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে।

 

Advertisement
spot_img