প্রবাসীদের জন্য ওয়েলফেয়ার সেন্টারের সেবা কার্যক্রমের তথ্য প্রকাশ

45

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ওয়েলফেয়ার সেন্টার ‘রিকভারি এন্ড এ্যাডভান্সমেন্ট অব ইনফরমাল সেক্টর এমপ্লয়মেন্ট’ (রেইজ) প্রকল্পের মাধ্যমে বিদেশ ফেরত অভিবাসী কর্মীদের পুন:একত্রীকরণে সহযোগিতার লক্ষ্যে কাজ করছে। এ প্রকল্পের শ্লোগন হচ্ছে “প্রত্যাগত অভিবাসী, ফিরে এলেও পাশে আছি”। রেইজ প্রকল্পে রেজিষ্ট্রেশন করলে ওরিয়েন্টেশন, কাউন্সেলিং, ঋন প্রাপ্তিতে সহায়তা, আত্মকর্মসংস্থানে সহযোগিতা, উদ্যোক্তা প্রশিক্ষণ গ্রহণে সহযোগিতা, আরপিএল (রিকগনিশন অব প্রায়র লার্নিং) সনদ প্রদান, কারিগরি প্রশিক্ষণ প্রভৃতি সেবা পাওয়া যাচ্ছে।

Advertisement
spot_img

ওয়েলফেয়ার সেন্টারে এসে একজন প্রবাসী তার ইমিগ্রেশন ক্লিয়ারেন্স পাসপোর্ট অথবা বিমান টিকেট অথবা দূতাবাস কর্তৃক আউট পাস অথবা ফেরত আসা সংক্রান্ত অন্য কোন প্রমাণক ও ২ কপি রঙিন ছবি এবং এনআইডি অথবা জন্মনিবন্ধন সনদ জমা দিয়ে রেজিস্ট্রেশন নিশ্চিত করতে পারে। এ সেবা কার্যক্রম মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে ও সেবা কার্যক্রমকে আরো বেগবান করতে দেশে প্রায় ৩১ টি ওয়েলফেয়ার সেন্টার কাজ করছে।

এছাড়াও বিদেশগামী ও প্রবাস ফেরত কর্মীদের সাময়িক আবাসন সুবিধাসহ বিভিন্ন সেবা প্রদানের জন্য ঢাকাস্থ হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সন্নিকটে নিরাপদ ও মনোরম পরিবেশে ওয়েজ আর্নার্স সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে। যেখানে বিদেশগামী ও বিদেশ ফেরত প্রবাসী কর্মীগণ ১০০ টাকা দিয়ে সরাসরি অনলাইনে আবেদন করে দিনে ২০০ টাকার বিনিময়ে সেখানে থাকার সুযোগ পাবে। প্রতিজন ১ টি সীটের জন্য আবেদন করতে পারবে।

চট্টগ্রাম ওয়েলফেয়ার সেন্টার গত এক বছরের প্রবাসে মৃত কর্মীর পরিবারের ৩২৭ জনকে মৃত্যুজনিত ক্ষতিপূরণ হিসেবে ৯ কোটি ৭৬ লাখ ৭৫ হাজার টাকার আর্থিক অনুদান, বকেয়া বেতন ইন্স্যুরেন্স ও সার্ভিস বেনিফিট আদায় পূর্বক ওয়ারিশদের ১১৪ জনকে ১২ কোটি ৪২ লাখ ২৫ হাজার ৮ শত ৯০ টাকা, আহত ও অসুস্থ কর্মীদের চিকিৎসার্থে ৩৭ জনকে ৪০ লাখ টাকা প্রদান করেছে। এছাড়া প্রবাসী কর্মীর মেধাবী সন্তানদের শিক্ষা সহায়তা ভাতা হিসেবে এস.এস.সি তে ৪৩৯ জনকে ১ কোটি ২০ লাখ ৭২ হাজার ৫শত টাকা, এইচ.এস.সি তে ৩৫৬ জনকে ১ কোটি ২১ লাখ ৪ হাজার টাকা, প্রতিবন্ধী সন্তানদের প্রতিবন্ধী ভাতা হিসেবে ৭৩ জনকে ৮ লাখ ৭৬ হাজার টাকা প্রদান করেছে। এছাড়াও রেইজ প্রকল্পের মাধ্যমে নগদ প্রণোদনা হিসেবে ৭ হাজার ৪ শত ৯৩ জনকে ১০ কোটি ১১ লাখ ৫৫ হাজার ৫ শত টাকা প্রদান করেছে।

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন ও ওয়ালফেয়ার সেন্টার এর আয়োজনে ক্ষুদ্রঋণ প্রদানকারী এনজিও প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের সাথে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সমন্বয় সভায় আজ এসব তথ্য জানানো হয়েছে। জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম সভায় সভাপতিত্ব করেন।

সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক বলেন, চট্টগ্রাম একটি প্রবাসী অধ্যুষিত এলাকা। তাছাড়া গ্রামীন জনপদের অর্থনৈতিক কর্মকান্ড প্রবাসীদের ঘামে শ্রমে প্রেরিত অর্থের উপর নির্ভরশীল। তিনি বলেন, বিদেশগামী ও বিদেশ ফেরতদের প্রশিক্ষণ প্রদানে সরকারি বিভিন্ন সংস্থা কাজ করছে। প্রবাসীদের নিয়ে সরকারের চলমান সেবা ও পদক্ষেপগুলো প্রতিটি জেলা উপজেলায় এবং প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রবাসীদের কাছে পৌঁছাতে হবে। ফেরত আসা কর্মীদের সঠিক কাউন্সেলিং এর মাধ্যমে বিভিন্ন পেশা ও ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ব্যবসায়ে নিয়োজিত করতে হবে। সেক্ষেত্রে ক্ষুদ্রঋণ প্রদানকারী এনজিও প্রতিষ্ঠানের এগিয়ে আসতে হবে। প্রবাসীদের প্রয়োজনীয় পূঁজির যোগানে পাশে থাকতে হবে।

জেলা প্রশাসন ও ওয়েলফেয়ার সেন্টার আয়োজিত সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সহকারী কমিশনার শিফাত বিনতে আরা, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের আঞ্চলিক প্রধান হাসান মো: সাহরিয়ার, জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসের সহকারী পরিচালক মাহেন্দ্র চাকমা, ওয়েলফেয়ার সেন্টারের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ এনায়েত উল্লাহ ও বিভিন্ন এনজিও প্রতিনিধিগণ। সঞ্চালনা করেন ওয়েলফেয়ার সেন্টারের কর্মকর্তা রিফাত মাহমুদ।

আলোচনা সভা শেষে প্রবাসী পরিবারের মেধাবী শিক্ষার্থী ও প্রতিবন্ধী সন্তানদের হাতে চেক তুলে দেওয়া হয়।

 

Advertisement
spot_img