চট্টগ্রামের নিজস্ব কৃষ্টি, কালচার ও সংস্কৃতির বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে সবার মতামতের ভিত্তিতে মেলার জন্য একটি স্থায়ী মাঠ খুঁজে বের করবেন বলে জানিয়েছেন বিভাগীয় কমিশনার ড. মো. জিয়াউদ্দিন।
বুধবার (১১ ডিসেম্বর) সকালে নগরের কাজীর দেউড়ি এলাকায় সার্কিট হাউজ সংলগ্ন পরিত্যক্ত শিশুপার্কে ৬ দিনব্যাপী মুক্তিযুদ্ধের বিজয়মেলা শুরু হয়েছে। মেলার উদ্বোধন শেষে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
বিভাগীয় কমিশনার ড. মো. জিয়াউদ্দিন বলেন, ‘আমরা শুধু কর্মের মধ্যে থাকবো না। আমাদের যে নিজস্ব কৃষ্টি রয়েছে, কালচার রয়েছে এই সংস্কৃতির বহিপ্রকাশ মেলাতেই হয়ে থাকে। ফলে এমন একটি স্থান আমরা খুঁজে বের করবো সকলের মতামত নিয়ে। কেননা আপনারাই ভালো বলতে পারবেন। আমাদের কাজ হচ্ছে আপনাদের চাওয়া পাওয়াকে রুপায়ন করা’।
তিনি বলেন, ‘আপনারা জানেন বৈষম্যবিরোধী গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আমরা যে নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি সেখানে বৈষম্যমুক্ত একটা বাংলাদেশ গড়ার আমাদের প্রত্যয় রয়েছে। সেক্ষেত্রে আমাদের কৃষ্টি, আমাদের কালচার সবকিছুকে তুলে ধরতে হবে। সেই তুলে ধরার জন্য সত্যিই একটি মেলার মাঠের প্রয়োজন। যেখানে আমরা আমাদের বাঙালি সংস্কৃতির বিভিন্ন সময় বিভিন্ন অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। সেই মাঠে বইমেলাসহ বিভিন্ন মেলার উদযাপনও যাতে করতে পারি।’
এ সময় চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ও বিজয়মেলা উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক ফরিদা খানম বলেন, ‘চট্টগ্রাম কৃষ্টি-কালচারে ভরপুর একটা জেলা। এখানে প্রতিবছর বাণিজ্য মেলা হয়, বিজয় মেলা হয়। আমাদের সবোর্চ্চ চেষ্টা থাকবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে যাতে একটা খেলার মাঠ ও একটা মেলার মাঠ পার্মানেন্ট (স্থায়ী) যাতে করতে পারি।’
এক প্রশ্নের জবাবে জেলা প্রশাসক বলেন, ‘খেলার মাঠকে গুরুত্ব দিয়েছি বলেই মেলাটাকে আমরা এখানে (পরিত্যক্ত শিশুপার্কে) সরিয়ে এনেছি। আমরা ভবিষ্যতেও এই মাঠটাকে সংস্কারের আওতায় রাখবো এবং মাঠটাকে আরও বেশি খেলার উপযোগী করার জন্য পর্যায়ক্রমে সেই পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।’
এদিকে, বিজয়ের ৫৩ বছর পূর্তিতে ‘চলো দুর্জয় প্রাণের আনন্দে’ — প্রতিপাদ্য নিয়ে এ মেলার আয়োজন করেছে জেলা প্রশাসন। ৫২’র ভাষা আন্দোলন, ৬৯’র গণ অভ্যুত্থান, ৭১’র মহান মুক্তিযুদ্ধ, ৯০’র গণঅভ্যুত্থান ও ২৪’র গণঅভ্যুত্থানের মূল্যবোধকে সামনে রেখে মেলায় প্রতিদিনের আয়োজনে থাকবে আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা ও বিজয়ের কথামালা।
উল্লেখ্য, প্রথমে ক্রীড়াতারকাদের ‘জন্মস্থান’ নগরের আউটার স্টেডিয়ামে বিজয়মেলা করতে গিয়ে ‘তোপের মুখে’ পড়ে স্থান পরিবর্তন করে জেলা প্রশাসন। পরে রেলওয়ের মালিকানাধীন সিআরবির মাঠে মেলা করার সিদ্ধান্ত নেয়। পরে সেটিও পরিবর্তন করে বিজয়মেলা বসেছে কাজীর দেউড়ির সেই ‘পরিত্যক্ত’শিশুপার্কে।