ডেঙ্গু এবং কিউল্যাক্সের প্রকোপ থেকে নগরবাসীকে বাঁচাতে মশা নিয়ন্ত্রণে পরিচ্ছন্ন বিভাগের কার্যক্রমের গতি বাড়াতে নির্দেশ দিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।
রোববার সকালে নগরীর ১৫নং বাগমনিরাম ওয়ার্ড পরিদর্শনে গিয়ে ডেঙ্গু মশার উপদ্রব কমানোর লক্ষে মশার ঔষুধ স্প্রে ও বিভিন্ন স্থানে জমে থাকা ময়লা-আবর্জনা অপসারণের নির্দেশ দেন মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।
মেয়র ওয়ার্ডে কর্মরত পরিচ্ছন্ন কর্মীদের হাজিরা প্রত্যক্ষ করেন এবং পরিচ্ছন্ন কর্মীদের নানাবিধ সমস্যার কথা শুনেন। এসময় ডোর টু ডোর শ্রমিক মো. রহিম বাদশার চোখের সমস্যার কথা শুনে তার চোখের চিকিৎসার দায়িত্ব নেন মেয়র। পাশাপাশি অনিয়মিত পরিচ্ছন্ন কর্মীদের সতর্ক করেন এবং একজনের পরিবর্তে অন্যজনের চাকরি করার কোনো সুযোগ নেই বলে জানান।
পরিছন্নতা বিভাগের কর্মকর্তা ও কর্মীদের উদ্দেশ্যে চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, আগের মেয়র-কাউন্সিলররা ইচ্ছামাফিক লোক নিয়োগ দিয়েছেন। এক ওয়ার্ডে ৭০ থেকে ৯০জন এমনকি অনেক ওয়ার্ডে ১০০ জনও আছে। আমি মনে করি প্রত্যেকে তার নিজ নিজ দায়িত্ব সঠিকভাবে পালণ করবে। এর বিনিময়ে সে বেতন নিচ্ছে। আমার যেটা দায়িত্ব অবশ্যই আমি তা করবো। পরিচ্ছন্ন কাজের নিরাপত্তা সরঞ্জাম, ভ্যান গাড়ি শীঘ্রই ব্যবস্থা করা হবে। জনগণের সেবক হিসেবে আমি দায়িত্ব নিয়েছি এবং তারাও আমার একটা অংশ। যাতে জনগণের কোন দুর্ভোগ না হয়, সে ব্যাপারে নৈতিকতার সাথে দায়িত্ব পালন করবে বলে আমি আশা করি।
মেয়র পরিছন্নতা কর্মীদের হুশিয়ার করে বলেন, কোন ধরনের ফাঁকিবাজি করার চেষ্টা করবেন না। যে কাজকে আপনারা রুজি-রোজগার হিসেবে নিয়েছেন; সেটাকে হক-হালালভাবে করার চেষ্টা করবেন। আমি মনিটরিং করছি এবং এটা চলমান থাকবে। কাজ করবেন না, অথচ বেতন নেবেন এটা হবে না। এধরনের কোন প্রমান পাওয়া গেল চাকুরি থাকবে না।
তিনি বলেন, “আমি শুনেছি যে আপনারা পরিচিত লোক দেখে দেখে স্প্রে মারেন। যারা পরিচিত তাদের বাসায় মারবেন, যারা অপরিচিত তাদের বাসায় মারবেন না এটা হতে পারে না। প্রত্যেক নাগরিকের অধিকার সমান। সমানভাবে সব জায়গায় মশার স্প্রে করবেন। বর্তমানে আমরা একটা ভালো মশার ওষুধ দিয়েছি মস্কুবান সলিউশন। সেটা প্রত্যেকটা ওয়ার্ডে পর্যাপ্ত পরিমাণে মজুদও আছে। কিন্তু ঠিকমত ঔষুধের ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
মেয়র বলেন, তিন-চার মাস পর বর্ষাকাল। বৃষ্টির পানি যাতে জমতে না পারে সেলক্ষে এখন থেকেই নালা-নর্দমা পরিষ্কার রাখতে হবে। নালার মধ্যে চিপসের প্যাকেট, পলিথিন, প্লাস্টিক, ইত্যাদি অপচনশীল ময়লা-আবর্জনার কারণে নালাগুলো ভরে যায়। ফলে পানি যেতে পারবে না, জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এ বিষয়ে সজাগ দৃষ্টি রাখার আহ্বান জানান।
ওয়ার্ড সচিবদের সতর্ক করে মেয়র বলেন, বর্তমানে কাউন্সিলর না থাকার কারণে জন্মনিবন্ধন, ওয়ারিস সনদ এই দুই ব্যাপারে সচিবদের দায়িত্ব নিয়ে কাজ করতে হবে। জনসাধারন যাতে কোনভাবেই নাগরিক সেবা নিতে এসে হয়রানির শিকার না হয়। কিছু ওয়ার্ড সচিবের উদাসীনতা লক্ষ্য করেছি। আমি অবিলম্বে তাদের সাথে একটা মিটিং করবো। যে সকল ওয়ার্ড সচিবের বিরুদ্ধে অভিযোগ আসছে প্রমান পাওয়া গেলে তাদের বদলীসহ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে। কাজেই আপনারা সাবধান থাকুন। কেউ যাতে আপনাদের ব্যাপারে কোন অভিযোগ করতে না পরে।
পরিদর্শনকালে উপস্থিত ছিলেন চসিক সচিব মোহাম্মদ আশরাফুল আমিন, প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা কমান্ডার লতিফুল হক কাজমি, আইন কর্মকর্তা মো. মহিউদ্দীন মুরাদ, ম্যালেরিয়া ও মশক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা মো. শরফুল ইসলাম মাহি, উপ-প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা প্রণব কুমার শর্মা, মেয়রের একান্ত সহকারী মারুফুল হক চৌধুরী (মারুফ) সহ পরিচ্ছন্ন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ।