আঞ্চলিক তথ্য অফিস পিআইডি চট্টগ্রামের উদ্যোগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসন ও জেলা তথ্য অফিসের সহযোগিতায় “বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে গণমাধ্যম ও অংশীজনের ভূমিকা” শীর্ষক মতবিনিময় সভা আজ অনুষ্ঠিত হয়।
চট্টগ্রাম পিআইডি’র উপপ্রধান তথ্য অফিসার মীর হোসেন আহসানুল কবীর এর সভাপতিত্বে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দিদারুল আলম সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন।
সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইকবাল হোসেন, সিভিল সার্জন ডা: মো. নোমান মিয়া, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক মোহাম্মদ রুহুল আমিন উপস্থিত ছিলেন। চট্টগ্রাম পিআইডি’র তথ্য অফিসার জি. এম সাইফুল ইসলাম এর সঞ্চালনায় সিনিয়র তথ্য অফিসার বাপ্পী চক্রবর্তী অনুষ্ঠানে সবাইকে স্বাগত জানান।
জেলা তথ্য অফিসার দীপক চন্দ্র দাস মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরের মাধ্যমে সভার বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত তুলে ধরেন। সভায় মুক্ত আলোচনা সেশনে প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদক বাহারুল ইসলাম মোল্লা, সিনিয়র সাংবাদিক আরজু, জসিম উদ্দিন, সাদত হোসেন, শফিকুল ইসলাম, মঞ্জুরুল আলম, মজিবুর রহমান লিমন, উজ্জ্বল চক্রবর্তী মাযহারুল ইসলাম, নিয়াজ মোহাম্মদ খান বিটু ও সমন্বয়ক মোহাম্মদ সিয়াম সুপারিশ তুলে ধরেন।
সভার শুরুতে জুলাই শহিদদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
সভায় বক্তারা বলেন, সাংবাদিকতায় হলুদ সাংবাদিক বা ভূয়া সাংবাদিকদেরকে চিহ্নিত করে তাদের ব্যাপারে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। গণমাধ্যমকে নিরপেক্ষ হতে হবে এবং অসংগতিপূর্ণ সংবাদ প্রচার বন্ধ করতে হবে। জেলা বা উপজেলার সাংবাদিকরা যাতে নিজস্ব মতামত তুলে ধরতে পারে সে বিষয়টি নিশ্চিতের পাশাপাশি মিডিয়া হাউসের নিজস্ব সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেয়ার প্রবণতা বন্ধ করতে হবে।
বক্তারা আরো বলেন, জুলাই আন্দোলনে জেলা উপজেলায় যে ছাত্র-জনতা আহত এবং নিহত হয়েছে তাদের পরিবারের বর্তমান অবস্থা ডিএফপি’র প্রকাশনা সচিত্র বাংলাদেশ ও নবারুণ এর মাধ্যমে প্রকাশ করে সারা বাংলাদেশে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা যায়। তাহলে দেশের মানুষ তাদের কথা জানতে পারবে।
জেলা প্রশাসক বলেন, আপনারা জানেন বৈষম্যর কারণে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল। সেই একই বৈষম্যর ফলে ছাত্ররা জুলাই বিপ্লবের মধ্যদিয়ে দেশকে স্বৈচারার মুক্ত করেছে। তাদের অকাতরে প্রাণ বিলিয়ে দেয়া দেশের প্রতি ভালবাসার শিক্ষা আমাদের দিয়ে গেছে এবং তাদের এ অবদান অনস্বীকার্য। এ আন্দোলন বিফল হলে তারা গণশত্রুতে পরিণত হতো। যেভাবে বিগত সরকারের প্রশাসন থেকে শুরু করে সাংবাদিক পযর্ন্ত চাটুকারিতা করেছে তাতে দেশের সব সিস্টেম নষ্ট হয়ে গিয়েছে।
তিনি আরো বলেন, সংবাদমাধ্যমকে রাষ্ট্র সংস্কারের দায়িত্ব নিতে হবে। এখন সাংবাদিকদের উপর কোন প্রেশার নেই। তাই, অপসাংবাদিকতা বা ভূয়া সাংবাদিকতা থেকে বেরিয়ে এসে সঠিক তথ্য লেখার মাধ্যমে দেশের মানুষের কাছে সত্য তথ্য তুলে ধরতে হবে। তবে কিছু বিষয়ে সবার নজর দিতে হবে তা হল রাজনৈতিক ও ব্যবসায়ীদেরকে পত্রিকার মালিক করা যাবে না। এবং ৮ম শ্রেণি পাশ কোন মানুষ যাতে প্রেস ক্লাবের সদস্য হতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। লেখার মাধ্যমে নিরাপরাধ ও অসহায় মানুষ যাতে হয়রানির স¦ীকার না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
এছাড়া সভায় সরকারি উর্ধ্বতন কর্মকর্তা, শিক্ষক, সাংবাদিক, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও সমন্বয়কসহ ৫০ জন উপস্থিত ছিলেন।