মেয়ের শ্বশুরবাড়ি থেকে ধরে নিয়ে গুলি করে হত্যা চেষ্টার অভিযোগে রাউজানের সাবেক এমপি এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী, তৎকালীন ওসি, এসআই, কনস্টেবলসহ ৩৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আদালত মামলাটি এফআইআর হিসেবে গ্রহণ করেছেন। সোমবার (১১ নভেম্বর) চট্টগ্রাম চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শহীদুল ইসলাম শুনানি শেষে এই আদেশ দেন।
মামলায় অভিযুক্তরা হলেন, রাউজানের সাবেক সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী জুনু, বাবুল মিয়া, রাউজান থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাস, এসআই টুটুল মজুমদার, কনস্টেবল মোহাম্মদ তৌহিদ, কনস্টেবল রাজীব চন্দ্র দাশ, কনস্টেবল আব্দুল গফুর, মোহাম্মদ এমরান, সেকান্দর মিয়া, জসীমউদ্দীন, বদিউল আলম, মো. ছোলেইমান, মো. ইলিয়াছ, মোহাম্মদ জয়নাল, মো. সাদ্দাম, এসকান্দর, ফারুক, হাসান, মতিউর রহমান,আব্দুল হালিম, নাছির, মফিজ, টাইগার নাসির, শামসু, লিটন, বেলাল, মালোম, দিদার আলম, রেজাউল করিম বাবুল, জাহাঙ্গীর, শফিক, শফিক, গিয়াস ও মহিউদ্দিন প্রকাশ মইন্যা।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বাদী পক্ষের আইনজীবী আনোয়ার হোসেন বলেন, আদালত মামলাটি এফ আই আর হিসেবে গ্রহণ করে সাবেক ওসি, এসআই, তিন কনস্টেবলসহ সকল আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০১৫ সালের (৯ ফেব্রুয়ারি) বোয়ালখালী উপজেলার চরণদ্বীপ ইউনিয়নের হাজীপাড়া ফকিরখালী এলাকায় মেয়ের শ্বশুরবাড়ি থেকে মামলার বাদী কামরুল হাসান টিটু ও তার ভাগিনা মোহাম্মদ হাকিমকে আটক করে নিয়ে যায় পুলিশ। মূলত বিএনপির দল করায় সাবেক সাংসদ ফজলে করিম চৌধুরীর নির্দেশে তাকে আটক করা হয়।
পরে চোখে কালো কাপড় মুড়িয়ে তিন ঘন্টা বিভিন্ন অজ্ঞাত স্থান ঘোরানোর পর নোয়াপাড়া পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে যায় তাদের। এরপর টিটুর মোবাইল ফোন থেকে তার পরিবারের সদস্য ও বিভিন্ন পরিচিতজনদের ফোন দিয়ে তাকে মেরে ফেলা হবে বলে জানান এসআই টুটুল মজুমদার। পরে মধ্যরাতে রাউজানের চাঁদের দিঘীর পাড় মাস্টারদা সূর্যসেনের বাড়ির পাশে খালি জমিতে নামিয়ে মারধর করে ও দুহাতের বুড়া আঙ্গুল ছুরি দিয়ে কেটে দেয়। এরপর তাকে বাম হাতের তালুতে ও দু’পায়ে গুলি করে। পরে পচন ধরাই তার ডান পা কেটে ফেলা হয়।
পরে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায় মামলার অভিযুক্তরা। প্রায় সাড়ে চার মাস চিকিৎসা নেওয়ার পর টিটুর বিরুদ্ধে অস্ত্র উদ্ধার ও বিস্ফোরক আইনে মামলা করা হয়। ২০২২ সালের শবে বরাতের রাতে টিটুর শারীরিক অবস্থা অবনতি হওয়ায় চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে টিটুকে কেরানীগঞ্জ কারাগারের মাধ্যমে রাজধানীর পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
সেখান থেকে প্রায় দেড় মাস চিকিৎসা নিয়ে তাকে ফের চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে আসা হয়। এরপর জামিনে মুক্তি পেয়ে বেরিয়ে এলেও তার ওপর চালানো হয় নিপীড়ন। ২০২২ সালে তার সকল চিকিৎসা পত্র নিয়ে ছিড়ে ফেলে। এছাড়া এ বিষয়ে কোন মামলা করলে টিটুসহ তার পরিবারের সদস্যদের মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করবে বলে জানানো হয়।