চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় মাজারের সম্মান ক্ষুণ হওয়ার অজুহাতে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে একটি গ্রামের চলাচলের জন্য একমাত্র সরকারি রাস্তা। এতে পড়ে বিপাকে পড়েছেন মির্জাখীল এলাকার কুতুবপাড়া গ্রামের তিন শতাধিক পরিবার। সর্বসাধারণের জন্য চলাচলের রাস্তার প্রতিবন্ধকতা গেইট খুলে দেয়ার জন্য আদালত দিয়েছেন একাধিক রায়ও। নির্দেশনা দিয়েছেন সাবেক এক রাষ্ট্রপতি !
চটগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিল্টন বিশ্বাস বলেন, ‘মির্জারখীল এলাকার সরকারি রাস্তা ওপর নির্মিত গেইট উচ্ছেদের বিষয়ে জেলা প্রশাসনের একটি নির্দেশনা পেয়েছি। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার জন্য সহকারি কমিশনার ভুমিকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।’
মির্জাখীল এলাকার বাসিন্দা তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘মাজারের সম্মান ক্ষুণের কথা বলে ত্রিশ বছর ধরে প্রায় তিনশ পরিবারের চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে রেখেছেন মির্জারখীল দরবার কতৃপক্ষ। চলাচলের পথটি বন্ধ থাকায় কয়েক কিলোমিটার ঘুরে চলাচল করতে হয় শত শত মানুষকে। গেইটটি অপসারণ করে রাস্তা সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেয়ার জন্য আদালত একাধিক রায় দিয়েছেন। সর্বশেষ গত সেপ্টেম্বরে উচ্চ আদালত গেইট অপসারণ করে ৩০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তির জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন। কিন্তু এখনো তা কার্যকর করা হয়নি।
জানা যায়, সাতকানিয়া উপজেলার মির্জাখীল গ্রামের কুতুবপাড়া এবং আশাপাশের এলাকার সর্বসাধারণের চলাচলের একমাত্র রাস্তাটি মির্জারখীল দরবার শরীফের সম্মান ‘ক্ষুণের’ অজুহাতে বন্ধ করে দেয়া হয় ১৯৯১ সালে। মাজার কতৃপক্ষ সরকারি রাস্তাটি সর্বসাধারণের চলাচল বন্ধ করতে তৈরি করে লোহার প্রতিবন্ধকতা গেইট। এতে সংক্ষুদ্ধ স্থানীয় জনগণ আদালতের শরণাপন্ন হলে ১৯৯২ সালে আদালত গেইটি অপসারণের নির্দেশ দেন। ১৯৯৪ সালে স্থানীয় জনগণের আবেদনের প্রেক্ষিতে তৎকালিন রাষ্ট্রপতি আবদুর রহমান বিশ্বাস গেইটটি অপসারণের নির্দেশ দেন। কিন্তু এসব আদেশ নির্দেশ তোড়ায় কেয়ার করে আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করে মির্জারখীল দরবার কতৃপক্ষ। এরপর নিম্ন আদালত থেকে উচ্চ আদালত পর্যন্ত একাধিক রায়ে গেইটটি সর্বসাধারণের জন্য খুলে দিতে নির্দেশনা দেয়া হয়। সর্বশেষ চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে স্থানীয় বাসিন্দা তারিকুল ইসলামের আবেদনে উচ্চ আদালত গেইটটি খুলে দিতে রুল ইস্যূ করেন। এ রুল বাস্তবায়ন করতে গত ৩ অক্টোবর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার জন্য সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশনা দেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর। একই সাথে ৩০ দিনের মধ্যে তা বাস্তবায়নের নির্দেশনা দেয়া হয়। কিন্তু নির্ধারিত সময় অতিবাহিত হয়ে গেলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি।#