“মানসিক সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে নিয়মিত কাউন্সেলিং সুস্থ জীবনে ফিরিয়ে আনতে হবে” – চবি উপ-উপাচার্য 

88

মানসিক সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে নিয়মিত কাউন্সেলিং এর মাধ্যমে মানসিক সমস্যাগ্রস্থ ব্যক্তিদের সুস্থ জীবনে ফিরিয়ে আনতে হবে।’ ‘কর্মক্ষেত্রে মানসিক স্বাস্থ্য গুরুত্ব দেওয়ার এখনই সময়’ এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস-২০২৪ উপলক্ষ্যে মেন্টাল হেলথ অ্যাডভোকেসি অ্যাসোসিয়েশন, ইউনাইট থিয়েটার ফর সোশাল অ্যাকশন (উৎস) ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ উদ্যোগে এবং ডিয়াকোনিয়া’র সহযোগিতায় ২২ অক্টোবর ২০২৪ বেলা ১১:০০টায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান অনুষদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ‘শিক্ষা ও কর্মক্ষেত্রে মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা গুরুত্ব ও করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির ভাষণে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) মাননীয় উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) প্রফেসর ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান একথা বলেন।

Advertisement
spot_img

মাননীয় উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) তাঁর ভাষণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও সময়োপযোগী অনুষ্ঠান আয়োজন করার জন্য আয়োজকদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানান এবং উপস্থিত সকলকে শুভেচ্ছা ও স্বাগত জানান। তিনি বলেন, ‘শরীর যেমন ভালো না থাকলে মন ভালো থাকে না, তেমনি মন ভালো না থাকলে শরীরও ভালো থাকে না। শরীর এবং মনের মধ্যে রয়েছে নিবিড় সম্পর্ক, একটি অপরটির পরিপূরক’। মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য প্রয়োজন পরিপাটি জীবন-যাপন করা। বিশেষকরে যথাসময়ে ঘুমানো, ঠিকমত আহার করা, সময়মত বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেয়া, খেলাধুলা, বিনোদন ও সাংস্কৃতিক চর্চায় মনোনিবেশ করা ইত্যাদি মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে’। মাননীয় উপ-উপাচার্য বলেন, ‘সমাজ বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে মানুষকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়-আশাবাদী মানুষ, হতাশাবাদী মানুষ এবং মধ্যমপন্থি মানুষ। সকল ক্ষেত্রে আশাবাদী মানুষের জীবন অনেক বেশি সুন্দর হয়। আশাবাদী মানুষেরা সবসময় পজেটিভ চিন্তা-ভাবনা করে পরিবার, সমাজ তথা রাষ্ট্রকে অনেক কিছুই দিয়ে এগিয়ে নিয়ে যায়। অপাদিকে হতাশাবাদী মানুুষের জীবন খুবই ঝুঁকিপূর্ণ হয়। কারণ হতাশাবাদী মানুষেরা জীবনে হতাশা ও নানা বাধাবিপত্তির কারণে আত্মহত্যার মত কঠিন সিদ্ধান্তও নিয়ে থাকেন।’ তিনি আরও বলেন, সকলকে কর্মক্ষেত্রে এবং শিক্ষাক্ষেত্রে অধিকতর সহনশীল হতে হবে এবং সকল ক্ষেত্রে মানসিক স্বস্তি প্রয়োজন। মাননীয় উপ-উপাচার্য আগামীদিনের সুন্দর বাংলাদেশ বিনির্মানে নিজেদেরকে আশাবাদী মানুষ হওয়ার আহবান জানান। একইসাথে মানসিক সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে নিয়মিত কাউন্সেলিং করে মানসিক সমস্যাগ্রস্থ ব্যক্তিদের সুস্থ জীবনে ফিরিয়ে আনতে হবে।’ মাননীয় উপ-উপাচার্য আমাদের মেধাবী শিক্ষার্থীদেরও মানসিকভাবে সবল রাখতে লেখাপড়ার পাশাপাশি নিয়মিত কাউন্সেলিং এর মাধ্যমে অধিকতর সচেতন করে তোলার আহবান জানান।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি চবি মাননীয় উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) প্রফেসর ড. মোঃ কামাল উদ্দিন বলেন, ‘স্বাস্থ্যই সকল সুখের মুল। মানসিক স্বাস্থ্য সহজে অনুমান করা যায়না কিন্তু অনুভব করা যায়।’ তিনি বলেন, ‘মানুষ সামাজিক জীব। প্রতিটি মানুষ কোন না কোনভাবেই মানসিক চাপে থাকেন। বিভিন্ন মানসিক সমস্যা মানুষকে অসুস্থ করে তোলে। মানসিকভাবে যদি একজন মানুষ ভেঙ্গে পড়ে তাহলে আজীবন সে অসুস্থ হয়ে যায়। এজন্য মানসিক সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে নিয়মিত কাউন্সেলিং করে মানসিক সমস্যাগ্রস্থ ব্যক্তিদের সুস্থ জীবনে ফিরিয়ে আনতে হবে। মাননীয় উপ-উপাচার্য দ্রুত সময়ের মধ্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ীভাবে মানসিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র পুনরায় চালু করতে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।

চবি সমাজ বিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মোঃ আলাউদ্দিন মজুমদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন চবি চীফ মেডিকেল অফিসার ডাঃ মোহাম্মদ আবু তৈয়ব। এছাড়াও অনুষ্ঠানে চবি নাট্যকলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আরাফাতুল আলম এবং চবি ইতিহাস বিভাগের মার্স্টাসের শিক্ষার্থী হাবিবুর রহমান বক্তব্য রাখেন।

অনুষ্ঠানে আলোচ্য বিষয়ের উপর ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন উৎস এর প্রোগ্রাম অফিসার রীপা পালিত। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন কর্মসূচি সমন্বয়কারী মুহাম্মদ শাহ্ আলম। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন উৎস এর নির্বাহী পরিচালক মোস্তফা কামাল যাত্রা। অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

Advertisement
spot_img