বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, চলতি বছরের মে মাস থেকে বাংলাদেশ চারটি ভয়াবহ দুর্যোগের মুখোমুখি হয়েছে। এর মধ্যে ঘূর্ণিঝড় রেমাল, হাওড় অঞ্চলে আকস্মিক বন্যা, যমুনার নদীর আশপাশে বন্যা এবং পূর্বাঞ্চলেও নজিরবিহীন বন্যা হয়। এসব দুর্যোগে মারাÍক বিপর্যয়ের পাশাপাশি বাংলাদেশের ৪৫ শতাংশ এলাকায় ১৮.৪ মিলিয়ন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পাশাপাশি মানুষের জীবন-জীবিকা ও বিভিন্ন স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব বিপর্যয় থেকে উত্তরণে বাংলাদেশ সরকারের উদ্যোগে এবং সংশ্লিষ্টদের মতামতের ভিত্তিতে ‘মানবিক সহায়তা পরিকল্পনা (এইচআরপি)’ গ্রহণ করা হয়েছে। ২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত এ পরিকল্পনা চলবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এ বছর ঘূর্ণিঝড় রেমালের সময় প্রথমবার মানবিক সহায়তার উদ্যোগ নেওয়া হয়, যা তৃতীয় ধাপে মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। এইচআরপির উদ্দেশ্য হলো দেশের ২৮টি জেলার ২.৫ মিলিয়ন মানুষের মাঝে সহায়তা পৌঁছে দেওয়া। মাত্র ২৮ শতাংশ অর্থায়ন পেলেও এইচআরপি ইতোমধ্যে ১.৮ মিলিয়ন মানুষের মাঝে সহায়তা পৌঁছে দিয়েছে। এ সংশোধিত পরিকল্পনাটি বাংলাদেশ সরকার, জাতিসংঘ ও অন্যান্য বেসরকারি অলাভজনক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ঐক্যবদ্ধ উদ্যোগ। এক্ষেত্রে অতিরিক্ত আরও অনুদান সংগ্রহের জন্য একটি সাধারণ প্ল্যাটফরম গঠনের আহ্বান জানায় এইচআরপি। মানবিক সমন্বয় টাক্স টিমের (এইচসিটিটি) সহ-সমন্বয়ক এবং বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক গুইন লুইস এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. কামরুল হাসান এ উদ্যোগটি চালু করেছিলেন।
লুইস বলেন, কয়েক মাসের ব্যবধানে বাংলাদেশের ওপর দিয়ে যে ভয়াবহ দুর্যোগ গেছে, তা অবর্ণনীয় মানবিক বিপর্যয়। সরকার ও মানবাধিকার সংস্থাগুলো ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে ত্রাণ ও সহায়তার জন্য অক্লান্তভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে দুর্যোগকালীন ঝুঁকি কমাতে সাহায্যকারী দাতা সংস্থাগুলোকে সরাসরি অনুদান দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন তিনি।
ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব কামরুল হাসান বলেন, সরকার, জাতিসংঘ, অন্যান্য গোষ্ঠী এবং এনজিও অংশীদারদের মাধ্যমে সহযোগিতামূলক কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে হবে। জলবায়ু সংকটে খাপ খাওয়ানোর জন্য জনসাধারণকে সামগ্রিকভাবে প্রস্তুত করতে হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সংশোধিত এইচআরপির মাধ্যমে দুর্যোগ পরিস্থিতে ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীকে সহায়তার পাশাপাশি শিশু সুরক্ষা ও শিক্ষার ব্যবস্থা করা হবে। এছাড়া ঘরবাড়ি নির্মাণ, খাদ্য ও পুষ্টির জোগান, প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত, বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ এবং ল্যাট্রিন পুনর্নির্মাণ করে দেওয়া হবে। এইচআরপির মাধ্যমে সমাজে অসহায় নারী, শিশু, প্রতিবন্ধী, হিজড়াসহ অন্যান্য পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর অধিকার রক্ষায় অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।