রাজধানীর শাহজাহানপুরে মতিঝিল আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম টিপু ও কলেজছাত্রী সামিয়া আফরিন প্রীতি হত্যায় অস্ত্র সরবরাহকারী জিতুকে জামিন দেননি আপিল বিভাগ।
মঙ্গলবার আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. নুরুজ্জামানের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ জামিন না দিয়ে বলেন, আরও তিন মাস জেলে থাক এই আসামি। আগস্ট মাসের ২১ তারিখ ফের শুনানি হবে।
এর আগে গেলো ১৬ মে দুই আসামির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে নাম আসার পরও আসামি ইমরান হোসেন জিতু তথ্য গোপন করে জামিন নেন। যিনি মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপু হত্যা মামলার অন্যতম আসামি। এই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে নাম থাকার তথ্য গোপন করে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ থেকে জামিন নেন আসামি জিতু।
বিষয়টি জানার পরদিনই তা আদালতের নজরে আনেন রাষ্ট্রপক্ষ। একইসঙ্গে জামিন সংক্রান্ত আদেশ প্রত্যাহার (রিকল) চেয়ে আবেদন করা হয়।
শুনানি শেষে ১৭ মে বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের তিন বিচারপতির বেঞ্চ জামিন সংক্রান্ত আদেশ প্রত্যাহার করে নেন।
গত বছরের ২৪ মার্চ রাতে রাজধানীর শাহজাহানপুরের আমতলা মসজিদ এলাকায় জাহিদুল ইসলাম টিপুকে (৫৪) গুলি করে হত্যা করা হয়। তিনি এসময় নিজ গাড়িতে খিলগাঁওয়ের বাগিচা এলাকার বাসায় যাচ্ছিলেন।
এ সময় এলোপাতাড়ি গুলিতে তার গাড়িচালক মনির হোসেন এবং রিকশা আরোহী কলেজছাত্রী সামিয়া আফরান জামাল গুলিবিদ্ধ হন। পরে হাসপাতালে নেয়া হলে টিপু ও সামিয়াকে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় করা মামলায় ওই বছরের ১০ জুন দুবাই থেকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয় সুমন সিকদার ওরফে মুসাকে। এই মুসার জবানবন্দিতে জিতুর নাম আসে। যেখানে বলা হয়, জিতুর দখলে থাকা একটি অস্ত্র এই হত্যাকাণ্ডে ব্যবহারের জন্য সরবরাহ করা হয়। অর্থাৎ হত্যাকাণ্ডে জিতুর সম্পৃক্ততা পাওয়ার কথা এই জবানবন্দিতে উঠে আসে।
এই মামলায় গত বছরের ১০ নভেম্বর চার্জশিট দাখিল করা পর্যন্ত জিতুকে জামিন দেয় বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেন ও বিচারপতি একেএম জহিরুল হকের দ্বৈত হাইকোর্ট বেঞ্চ। এই জামিন স্থগিত চেয়ে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ।
ওই বছরের ৫ ডিসেম্বর আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত হাইকোর্টের দেয়া জামিন স্থগিত করে দেয়। একইসঙ্গে আবেদনটি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে পাঠানো হয়। সেই মোতাবেক ১৬ মে আপিল বিভাগের দুই নম্বর বেঞ্চে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনটি শুনানির জন্য আসে। সেখানেই তথ্য গোপন করে জামিন নেন তিনি।