গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী ৮মেয়র প্রার্থীর মধ্যে পাঁচজনই স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী। তবে সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থী ২৪৬ জনের মধ্যে ৯২ জন মাধ্যমিক পাশ করেননি। স্নাতকোত্তর রয়েছেন ২১ জন। আর সংরক্ষিত ৭৯ জন প্রতিদ্বন্দ্বী নারী কাউন্সিলরের মধ্যে ৪০ জন মাধ্যমিক পাশ করেননি। স্নাতকোত্তর রয়েছেন ৮ জন।
স্নাতকোত্তর মেয়র প্রার্থীরা হলেন আওয়ামী লীগ মনোনীত দলীয় প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খান, জাতীয় পার্টি মনোনীত দলীয় প্রার্থী এম এম নিয়াজ উদ্দিন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত দলীয় প্রার্থী গাজী আতাউর রহমান, স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহানুর ইসলাম ও হারুন-অর রশিদ।
স্বতন্ত্র নারী মেয়র প্রার্থী জায়েদা খাতুন নিজের শিক্ষাগত যোগ্যতা উল্লেখ করেছেন স্বশিক্ষিত এবং জাকের পার্টির মেয়র প্রার্থী রাজু আহমেদ অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছেন বলে হলফনামায় উল্লেখ করেছেন।
মেয়র এবং সাধারণ কাউন্সিলর পদের প্রার্থীদের মধ্যে বেশির ভাগের পেশা ব্যবসা। মেয়র পদে তিনজন ও সাধারণ কাউন্সিলর পথে ১৯২ জন পেশা হিসেবে ব্যবসা উল্লেখ করেছেন। সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী ৭৯ জনের মধ্যে ৩৯ জন গৃহিণী।
সোমবার সকালে গাজীপুর প্রেসক্লাবে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ কুমুর সরকার এসব তথ্য জানান।
সুজন’র গাজীপুর জেলা শাখার সভাপতি অধ্যাপক আমজাদ হোসেনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ইফতেখার শিশিরের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, সুজনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকার, আঞ্চলিক সমন্বয়কারী তৌফিক জিল্লুর রহমান, গাজীপুর মহানগর কমিটির সভাপতি মনিরুল ইসলাম রাজীব, গাজীপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মাহতাব উদ্দিন আহাম্মদসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার প্রতিনিধিরা।
সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, গাজীপুর সিটি নির্বাচনে একটা বড় রাজনৈতিক দল অংশ না নেয়ায় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু নিরপেক্ষ হলেও গ্রহণযোগ্যতার ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন কিছুটা ঝাঁকুনি খাবে।
অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস আরো বলেন, একজন প্রার্থীর কী যোগ্যতা তার পুরোপুরি তথ্য একজন ভোটারের জানা উচিত। এক্ষেত্রে একজন ভোটার প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে উপযুক্ততা নির্ণয় করতে পারেন। নির্বাচিত হওয়ার পর নির্বাচিত ব্যক্তিকে অবশ্যই তার জবাবদিহিতা, যোগ্যতা, স্বচ্ছতা এবং জনঅংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হয়। সেসব বিষয় নির্ণয়ের ক্ষেত্রেও ভোটারকে প্রার্থীর তথ্য জানতে হবে। প্রার্থীর মধ্যে জবাবদিহিতা আছে, স্বচ্ছতা আছে, কিন্তু সার্ভিস ডেলিভারি দেয়ার মতো যোগ্যতা নেই। সেসব বিষয়গুলোর ব্যাপারেও প্রার্থী নির্বাচনের ক্ষেত্রে ভোটার প্রার্থীর তথ্য কাজে লাগাতে পারবেন।
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজনের) কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকার বলেন, নির্বাহী বিভাগের দায়িত্ব হচ্ছে নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতা করা। নির্বাচন কমিশন এক্ষেত্রে মূল ভূমিকা পালন করবে। অতীতেও নির্বাচনের ব্যাপারে অনিয়মের অভিযোগ এসেছে। কেউ প্রচারণায় বাধা সৃষ্টি করছে এমন ঘটনা আমরা দেখতে চাই না। নির্বাচন কমিশনকে সাংবিধানিক দায়িত্ব দেয়া হয়েছে নির্বাহী বিভাগকে কাজে লাগানোর জন্য। প্রয়োজনে তিনি নির্বাহী বিভাগের লোকদেরকে বাধ্য করতে পারেন।
দিলীপ সরকার আরো বলেন, সব দলের অংশগ্রহণে একটি প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচনের যে প্রত্যাশা আমাদের ছিল তা পূরণ না হলেও যে সকল দল ও প্রার্থীরা এই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন তারা সকলেই যেন নির্বাচন কমিশনসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের কাছে সম-সুযোগ বা সমাজচরণ পান। অর্থাৎ, এই নির্বাচনে যেন একটি লেভেল প্রেয়িং ফিল্ড দৃশ্যমান হয়। একই সাথে নির্বাচন কমিশন সরকার জনপ্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সকল অংশে জোনসহ অবস্থান থেকে স্ব-স্ব ভূমিকা যথাযথভাবে পালন করে এই নির্বাচনকে সুষ্ঠুভাবে সম্পাদন করবেন।