বিগত বৈশ্বিক মহামারি কোভিড-১৯ করোনাকালীন দুর্যোগ চলাকালীন সময়ে ২০ সালের মে -জুন এর দিকে মাত্র দু’মাসের ব্যবধানে আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন চট্টগ্রামে জেলা বারের ১৫জন বিশিষ্ট আইনযোদ্ধা । এর মধ্যে কেউ মারা গেছেন করোনা উপসর্গ নিয়ে, কেউ বার্ধক্যজনিত কারণে, আবার কেউ দুরারোগ্য ব্যাধির কারণে । যাঁদের হারিয়েছি তাদের মধ্যে জেলা বার সমিতির সর্বজন শ্রদ্ধেয় গুণীজন, দেশবরেণ্য আইনজীবী, আইন অংগনের বটবৃক্ষ ও প্রতিষ্ঠানতুল্য ব্যক্তিত্ব, বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সাবেক সদস্য, ঐতিহ্যবাহী চট্টগ্রাম জেলা বার সমিতির সাবেক সভাপতি জনদরদী প্রথিতযশা সিনিয়র এডভোকেট এবং বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ আলহাজ্ব মোঃ কবির চৌধুরী স্যার অন্যতম । মৃত্যুকালে তাঁর বয়স ছিল ৮৬ বছর । তিনি আমাদের চট্টগ্রাম বারের বয়োজ্যেষ্ঠ আইনজীবী ছিলেন । ১৯৬৩ সালে তিনি ঐতিহ্যবাহী চট্টগ্রাম জেলা বারে আইন পেশায় যোগ দেন । ১৯৮৯ সালে তিনি ঐতিহ্যবাহী চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ছিলেন । পরবর্তীতে তিনি আইনজীবীদের নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সদস্য পদেও নির্বাচিত হয়েছিলেন । গত ২ জুন সকাল ১১টায় কোভিড ১৯-এ আক্রান্ত হয়ে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের আইসিইউতে মৃত্যুবরণ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন) ।মৃত্যূকালে তিনি চার পুত্র যথাক্রমে রাফ উদ্দিন কবির আনিস, ইরফান উদ্দিন কবির আরিফ, ফখর উদ্দিন কবির আতিক, শফি উদ্দিন কবির আবিদ ও তিন কন্যা যথাক্রমে সেলিনা বেগম, সালমা বেগম, তাহমিনা বেগম সহ নাতি নাতনি আত্মীয় স্বজন ও বহু গুণগ্রাহী রেখে যান । পারিবারিক সুত্রে জানা যায় তাঁর গায়ে ব্যথা শুরু হয় গত ঈদের রাত থেকে । পরদিন থেকে জ্বর, হালকা কাশি । বিকালের দিকে তাঁর হঠাৎ খারাপ লাগা শুরু হয় । চোখে অন্ধকার দেখলেন, মনে হল মাথা ঘুরে পড়ে যাবেন । প্রেশারও বেশি । আগের দিন থেকেই মানসিকভাবে তিনি খুব আপসেট ছিলেন কারণ তাঁর ঘনিষ্ঠজন সিনিয়র এডভোকেট আবদুস সালামের মৃত্যুর সংবাদে । প্রতি ঈদের সকালে তিনি আসেন, এবার অপেক্ষা করেও না আসায় কবির স্যার খবর নিয়ে কারো কাছে শুনলেন, তিনি রাতেই করোনায় মারা গিয়েছেন ।কবির চৌধুরীর সন্তান শফি উদ্দিন কবির আবিদ থেকে জানতে পারলাম তাঁর পিতা আফসোস করছিলেন, এডভোকেট আব্দুস সালামের জানাযার সালাতে দাঁড়াতে পারলেন না, জানাযার লোক হয়েছে কি না। ক’দিন থেকে বলছিলেন, করোনার যে পরিস্থিতি, বাঁচবেন কি না । স্যার তাঁর ছেলেকে বলেছিলেন – তিনি অন্ততঃ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাঁচতে চান । জীবনের সব আকাঙ্খা ও কর্তব্য তিনি সম্পাদন করেছেন, শুধু একটা ইচ্ছে পূরণ বাকি,তা শেষ করে যেতে চান । ক্যান্সার ও হার্টের রোগীদের চিকিৎসার খরচ নির্বাহের জন্য জন্মস্থান আনোয়ারায় নিজ গ্রামে একটা দাতব্য ফাউন্ডেশন করতে চান । তাঁর পুত্র বলেন সেদিন শারীরিক অবস্থা দেখে স্বভাবতই বুকটা তাঁর থম মেরে গেল। উপসর্গগুলো ভাল ঠেকছিল না । শুরু হলো হাসপাতালে যোগাযোগ।ভর্তির জন্য চট্টগ্রামের প্রায় সমস্ত বেসরকারি ক্লিনিকগুলোর সাথে যোগাযোগ করা হয় তাঁর পরিবারের পক্ষ হতে, তাঁর শুভানুধ্যায়ীদের মাধ্যমে। জ্বর আছে, ফলে করোনা সাসপেক্টেড । ইতিমধ্যে বিনা চিকিৎসায় করোনা উপসর্গ নিয়ে প্রিয় ভাই এডভোকেট মোহাম্মদ আবুল কাশেম চৌধুরীও মারা গেলেন । করোনা পরীক্ষা ছাড়া কেউ রোগী ভর্তি করবে না । ঠিক করা হয়, পরদিন জেনারেল হাসপাতালে বাবার করোনা টেস্ট করা হবে । নানা চেষ্টা চরিত্রের পর তাঁর বয়স বিবেচনায় আলাদা রুমে স্পেশাল টেস্টের একটা ব্যবস্থার প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেল । তাঁর কাছে মোবাইল থাকায় এর মধ্যেই একজন আইনজীবীর কাছ থেকে খবর পেয়েছেন, এডভোকেট আবুল কাসেম চৌধুরী শ্বাসকষ্ট নিয়ে ঘুরেছেন ক্লিনিকের দ্বারে দ্বারে। শেষ পর্যন্ত সিট পেয়েছেন চট্টগ্রাম মেডিকেলের একটি ওয়ার্ডের ফ্লোরে । শ্বাসকষ্টেই সেখানে সেদিন তিনি মারা যান । সেদিন রাতে বাবা ঘুমোতে পারেননি । তিনি বলতেছিলেন, ঘুম আসে না, বারবার স্বপ্ন দেখছেন তিনি – রোগীরা হাসপাতালে হাসপাতালে ঘুরছে, সিট পাচ্ছে না । কোথাও ভর্তি নিচ্ছে না ।আর ভাবছিলেন তিনি আইন পেশায় চসিকের একুশে পদক পাওয়া আইনজীবী, চট্টগ্রাম বারের সাবেক সভাপতি, বার কাউন্সিলের মেম্বার ছিলেন, তাঁর অসংখ্য শুভানুধ্যায়ী – তাঁর জন্য অনেকে চেষ্টা করছেন, তাঁর ক্ষেত্রে এ অবস্থা হলে, অন্যান্য সাধারণ রোগীদের কি পরিস্থিতি? ২৯শে মে টেস্টের জন্য তাঁকে নিয়ে তাঁর পুত্র শফি উদ্দিন কবির আবিদ চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে যান । সেদিন তাঁর জ্বর বাড়ল । অক্সিজেন স্যাচুরেশন অনেক কমে গেল । দ্রুত অক্সিজেন দিতে হবে । সকালে উনার শ্বাসকষ্ট বাড়লো । কিন্তু কোথাও সিট নেই, আইসিইউ নেই । ভেঙ্গে পড়েননি তাঁর পুত্র, মানসিকভাবে প্রস্তুত ছিলেন । ৩০শে মে সকালে তাঁকে নিয়ে আসা হল সাথে অক্সিজেন সিলিন্ডারসহ জেনারেল হসপিটালে এবং ভর্তি করানো হয় এবং গত ২ জুন জেনারেল হাসপাতালের আইসিইউতে তিনি মৃত্যুবরণ করেছেন । প্রবীণ আইনজীবী কবির চৌধুরী মেধায়, প্রজ্ঞায়, মননে, পেশাগত সদাচরনে, উন্নত রুচি সংস্কৃতিতে, নৈতিকতায়, নিষ্ঠায়, পরিমিতিবোধে এক অনন্য সাধারণ অনুকরণীয় ব্যক্তিত্ত্ব ছিলেন। অতি সহজ সরল সজ্জন, নিরহংকারী এ মানুষটি আত্মপ্রচার বিমূখ, স্বল্পভাষী ও অন্তরমূখী হওয়ার কারনে দুর থেকে দেখে এ বিরল গুণের মানুষটিকে সহজে বুঝা-জানা কঠিন ছিল । কোন জটিল বিষয়ে সহজ সমাধান দেয়া বিশেষত: আরবিট্রেশনে নির্মোহ ভাবে স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ সিদ্ধান্ত প্রদানের ক্ষেত্রে তিনি দীর্ঘ কাল অনন্য নজির হয়ে থাকবেন । সংকটে, দুর্দিনে আইনজীবী পরিবারের এ সভ্য আমাদের বিশ্বাসের- নির্ভরতার অন্যতম আশ্রয়স্থল ছিলেন ।তাঁর রিপ্লেসমেন্ট বা শূন্যস্থান পূরণ সহজে হবার নয় । তিনি দীর্ঘ সময় মানবাধিকার আন্দোলনের সাথে সম্পর্কিত ছিলেন । অত্যন্ত জ্ঞানী গুণী নির্লোভ নির্মোহ একজন সৎ চরিত্রবান পেশাজীবী । মানব সেবায় তাঁর অবদান অনস্বীকার্য । তিনি আনোয়ারার বটতলী গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত ঐতিহ্যময় মুসলিম পরিবারে ১৯৩৬ সালের ১ মার্চ-এ জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর জন্মের ৬ মাস আগে তাঁর পিতা মরহুম আফিউদ্দিন চৌধুরী ইন্তেকাল করেন । ৫ বছর বয়সে স্যারের মাতারও ইন্তেকাল হয় । এক বড় ভাই আর বোনেরা তাঁকে বড় করে তুলেন । স্যারের মৃত্যুর ৪ বছর আগে ২০১৬ সালের ১৯ ই নভেম্বর তাঁর স্ত্রী নুরুন নাহার বেগম পরপারে চলে যান। এর পর থেকে তিনি মানসিকভাবে খুব বেদনাহত হয়ে পড়েন । তাঁর শ্বশুর ছিলেন মরহুম আলহাজ্ব নজিরউদ্দীন আহামদ, তিনি তৎকালীন চট্টগ্রাম মিউনিসিপালিটি ‘র চীফ একাউন্টেন্ট ছিলেন ।তিনি ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন, স্বরাজ আন্দোলন এ মৌলানা মনিরুজ্জামান ইসলামাবাদী, মোহাম্মদ আলী, শওকত আলী গনের সাথী ছিলেন, ১৯০২ সালে ১ম বিভাগে এন্ট্রান্স পাশ করেছিলেন।তিনি তৎকালীন পটিয়া থানার বৃহত্তর জোয়ারা ইউনিয়ন পরিষদের প্রেসিডেন্ট ছিলেন।তিনি মুক্তিযুদ্বের সময় অনেক হিন্দু শরণার্থীদের আর্থিক সাহায্যদান করেছেন।স্বাধীনতার পর জোয়ারা ইউনিয়নবোর্ড এর রিলিফ কমিঠির আমৃত্যু চেয়ারম্যান ছিলেন।পাকিস্তান আমলে মৌলিক গণতন্ত্রী ছিলেন । মরহুম বদিউল আলম এডভোকেট সাবেক সভাপতি চট্টগ্রাম বার কবির স্যারের চাচা শ্বশুর ছিলেন । কবির স্যার আমার পিতা সিনিয়র এডভোকেট মরহুম আবু মোহাম্মদ য়্যাহয়্যার ঘনিষ্ট বন্ধু ছিলেন । চট্টগ্রাম কলেজ থেকে দু’জনই গ্র্যাজুয়েশন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএল.বি. ডিক্রী অর্জন । বারে যোগদানও প্রায় একই সময়ে । ৬ই মে ২০০৭ সালে সকালে আমার পিতা আকষ্মিকভাবে মৃত্যু বরণ করেন । সরকারী মহসিন কলেজেরে মাঠে আমার পিতার বিশাল ২য় নামাযে জানাযায় তিনি বক্তব্য রাখেন । সেই বক্তৃতায় তিনি বলেছিলেন, “আমার ভাই এডভোকেট মরহুম আবু মোহাম্মদ য়্যাহয়্যা’কে আমি আমার ছাত্রজীবন থেকে চিনি । তিনি সারাজীবন মানব সেবা করেছেন । তিনি ওকালতিকে শুধু পেশা হিসেবে নয়, এবাদত হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন ।” পেশাগত জীবনে তিনি আমার পিতার সততার ও ন্যায়-নিষ্ঠার বিষয়াদির উচ্ছ্বাসিত প্রশংসা করেন । জানাজার সালাতে আমার আব্বা সম্পর্কে তাঁর দেয়া ছোট মূল্যবান বক্তব্যটি আজও কানে ধ্বনি-প্রতিধ্বনিত হচ্ছে । তিনি আমার শ্বশুর আব্বা ঐতিহ্যবাহী চট্টগ্রাম আইন কলেজের সাবেক শিক্ষক ব্যারিস্টার আমিনুল হক এস্টেটের আইন উপদেষ্টা ছিলেন । পারিবারিকভাবে ঘনিষ্ট আপনজন । আমি সিনিয়রকে খালু বলে ডাকতাম । মৃত্যুর কিছুদিন আগে কোভিড-১৯ করোনাকালীন সরকারীর ছুটির শুরুর আগের দিন আদালত পাহাড়ে মরহুম এডভোকেট বদিউল আলম স্মারক ফুট ওভার ব্রিজে তাঁর সাথে দেখা হলে তিনি আমাকে মায়াভরা কণ্ঠে নাম ধরে ডাকেন এবং বলেন, ‘জিয়া গতকাল তোমার সাক্ষাৎকারটি সময় টিভিতে দেখলাম, খুব ভাল বলেছ, দোয়া করছি ।” ঐদিন কেন জানি খুব ইচ্ছে হচ্ছিল স্যারের সাথে একটা সেলফি তুলি । কিন্তু সাহস করে লজ্জায় বলতে পারলাম না । ওটাই আমার সাথে স্যারের শেষ দেখা ছিল । বহু স্মৃতি স্যারকে নিয়ে মনে পড়ে । আজো মনে পড়ে ১৯৯৫ সালে আমার বিয়ের দিন লেডিস ক্লাবে স্যার সবার সামনে এসে দীর্ঘ সময় বসেছিলেন এবং দোয়া করেন । ব্যারিস্টার মিল্কী স্যারের নেতৃত্বে ৯০ দশকে চট্টগ্রামের মানবাধিকার আন্দোলনে মিল্কী স্যার ও মোহাম্মদ কবির স্যারের সহযোদ্ধা হিসেবে তাঁদের কাছ থেকে অনেক কিছু শেখার সুযোগ পেয়েছি । তিনি, আমার আব্বা, মিল্কী স্যার, মির্জা স্যার প্রমুখ মজলুম জননেতা মাওলানা ভাসানীর অনুসারী ছিলেন ।জিয়াউর রহমানের শাসনামলে তিনি বিএনপি-র প্রথম কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হন এবং এরপর থেকে বিএনপি-র রাজনীতির সাথেই কখনো সক্রিয়ভাবে, কখনো আইনজীবী সংগঠনের মাধ্যমে যুক্ত ছিলেন। গত দুই দশক তিনি জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ও চট্টগ্রাম জেলা সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন ।কবির স্যার বিএনপি-র দলীয় রাজনীতি করলেও তিনি দলীয় লেজুরবৃত্তি বা তোষামোদির রাজনীতি করতেন না ।বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে দলের পরিচয় কাজে লাগিয়ে ব্যক্তিগত সুবিধা আদায় ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের প্রতিযোগিতায় তিনি যুক্ত হননি। স্যার দলমত নির্বিশেষে সকলের নিকট গ্রহণযোগ্য ও সম্মানের পাত্র ছিলেন ।আমরা তাকে দেখেছি তিনি অর্থলোভী মামলাবাজ আইনজীবী ছিলেন না, পারিবারিক বা সম্পত্তিগত বিরোধে চেষ্টা করতেন মামলা এড়িয়ে উভয়পক্ষের যথাসম্ভব স্বার্থ রক্ষা করে সালিশ করে দিতে। দেওয়ানী আইনজীবী হিসেবে অনেক পরিবারের সম্পত্তি বন্টনে তিনি মধ্যস্থতা করতেন, তাদের অনেককে সারাজীবন যোগাযোগ রাখতে ও সম্মান করতে দেখেছি। এই জন্যে যেকোন পারিবারিক, সামাজিক, বাণিজ্যিক জটিল বিরোধের সমোঝোতায় বা সালিশে তাঁকে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে মান্য করা হতো । তিনি দেশের বহু গুরুত্বপূর্ণ বিরোধ আদলতের বাইরে সালিশ ও সমঝোতার মাধ্যামে নিষ্পত্তি করতে সক্ষম হন ।মানুষের প্রয়োজনে তিনি সাধ্যমত সাহায্য করার চেষ্টা করতেন। মেয়ের বিয়ে বা পরীক্ষার ফিসের জন্য অনেককে তিনি সাহায্য করেছেন, এসব জানাজানি করা পছন্দ করতেন না। তিনি অত্যন্ত সামাজিক ও মিশুক চরিত্রের ছিলেন, ধনী-গরিব, ছোট-বড় সবার সাথে মিশতেন ও কথা বলতেন, মানুষের সঙ্গ পছন্দ করতেন। পাথরঘাটার নিজ বাসভবনের নীচ তলার চেম্বারে যখনই যেতাম দেখতাম সাহায্যপ্রার্থী সাধারণ মানুষের প্রচুর আনাগোনা । বেলা বিস্কুট আর চা না খেয়ে কেউ আসতে পারতেন না । দেখতাম আমাদের ঘনিষ্ট আত্মীয় চট্টল সার্দুল এম এ আজিজ ও মজিদ ভাতৃদ্বয়ের পরিবারের সাথে এবং রূপায়ন ডেভলাপার কোম্পানির আরবিট্রশন মামলায় তাঁর ঐতিহাসিক রায় সকলের জন্য প্রণিধানযোগ্য । তাঁর ইন্তেকালে মানবাধিকার সংগঠন বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশন বিএইচআরএফ এর পক্ষ থেকে গভীর শোক প্রকাশ করা হয় । আল্লাহ পাক মরহুমের মৃত্যুকে শাহাদাৎ এর মৃত্যু হিসাবে মকবুল কবুল ফরমান, আমিন । মরহুমের শোক সন্তপ্ত পরিবার পরিজনের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাই । চট্টগ্রাম মহানগরে এবং আনোয়ারা নিজ গ্রামে তাঁর স্মৃতি ধরে রাখতে তাঁর নামে অন্ততঃ একটি সড়কের নামকরণ করার জন্য স্থানীয় প্রশাসনের প্রতি জোর দাবী জানাচ্ছি ।
লেখকঃ আইনবিদ, কলামিস্ট, মানবাধিকার ও সুশাসনকর্মী।